বর্তমান সমাজে মুনাফিকি

স্যার বলেছিলেন, " আজাকাল কিছু মেয়েকে দেখি বোরকা-নেকাব পড়ে, মুখ-হাত ঢেকে যেন চূড়ান্ত  পরহেজগার। কিন্তু সন্ধ্যার সময় পদ্মার ঐ চর থেকে দেখি ওরাই বেড় হয়!"


বিষয়টা শুনে অনেকের রাগ লাগলেও কথাটা সত্য। দাড়ি-টুপি লাগিয়ে সারাদিন আল্লাহ আল্লাহ নাম মুখে নেন আবার জিনিসের দাম বেশি ধরে মানুষকে ঠকান। বোরকা পরে আছেন কিন্তু তিন বন্ধুর সাথে দুইহাতে দুইজনের হাত ধরে হেঁটে যাচ্ছেন। এইরকম দৃশ্য আজকাল খুব পরিচিত। আবার ফেসবুক ওয়ালে শতশত ধর্মের গান-ওয়াজ শেয়ার করা আছে, আছে বড় বড় বিখ্যাত বক্তাদের ইউটিউব ভিডিও শেয়ার করা। কিন্তু ইনবক্সে শতশত মেয়ের সাথে বক বক আর নুড ছবি চাওয়া মানুষও আজকাল কম দেখি না। ক্লাসের সবাই জানে ছেলেটা খুব ভালো, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে। কিন্তু রাত হলেই ছেলেটা ঐ যে কি কি জানি ওয়েবসাইটে এইচডি কোয়ালিটির ভিডিও দেখে! এইভাবেই বর্তমানে হাজার হাজার মানুষ নিজের একটা মুখোশ তৈরি করেছেন। অন্য যে কেউ তাদের এই মুখশে এতটাই বিশ্বাসী যে কেউ তার কুকর্ম গুলো বর্ণনা করলে, বর্ণনাকারীকেই মার খেতে হবে। দাড়ি-টুপির এই শয়তান গুলো শতশত মেয়ের জীবন যেমন নষ্ট করছে। বোরকা পড়া এই মেয়েগুলো কত ছেলের জীবন শেষ করছে তার হিসাব নাই।

আমি কোনো ধর্মের বিরুদ্ধে বলছি না। বোরকা-দাড়ির বিপক্ষেও বলছি না। বলছি যে কিছু মানুষ এই ধর্মীয় বিষয়গুলোর প্রতি মানুষের দূর্বলতাকে পুঁজি করে অনেক মানুষের ক্ষতি করে দিচ্ছে। এদের এই মুনাফিকির ফল এরা রোজ হাশরে পাবেন, অবশ্যই। কিন্তু সর্বসাধারণের এইসব বিষয়ে যথেষ্ট সচেতনতা হওয়া প্রয়োজন। কেউ দুইটা ধর্মের কথা বললেই তাকে ভালো মানুষ বলে বিশ্বাস করে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। মিথ্যা কথা বলে, ওয়াদা ভেঙে, মানুষের মনে কষ্ট দিয়ে, ছেলে-মেয়ের জীবন নষ্ট করে; নামাজ পড়ে খুব একটা লাভ হবে না। আপনি যদি কোনো মানুষের ক্ষতি করে থাকেন তবে সেই ক্ষমা মহান আল্লাহ করবেন না৷ মহান আল্লাহ মানুষকে এই মর্যাদা দিয়েছেন যে যদি কেউ তার ক্ষতি করে, তাহলে যার ক্ষতি করেছেন তার কাছেই ক্ষমা চাইতে হবে। আর সে ক্ষমা করলে ক্ষমা হবে আর না করলে শাস্তি হবে, নিজের নেকি দিতে হবে বা তার পাপ নিতে হবে। তাই মানুষের ক্ষতি করার আগে ভেবে নিবেন। আর ধর্মের মুখোশে মুনাফিকি অনেক ভারী হবে তা মনে রাখবেন। কারণ ধর্মের চিহ্ন ব্যবহার করে মুনাফিকি মানুষ এবং ধর্ম উভয়ের সাথে মুনাফিকি।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ